লিপ ক্যান্সার সাধারণত ঠোঁটে কিংবা মুখের কোনো অংশে হতে পারে।যদি ঠোঁটে কোনো ঘা কিংবা ক্ষত কিংবা কোনো অতিরিক্ত মাংসপিন্ডর অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় এবং যদি সেটি অনেকদিন ধরে থাকে এবং আরও বাড়তে থাকে তাহলে বুঝতে হবে সেটি আসলে ক্যানসার। 

সুতরাং এরকম কোনো ক্ষতর অস্তিত্ব যদি টের পান তাহলে অবশ্যই সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।ক্যানসারের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে ক্ষতর আকার, কোন অবস্থায় আছে, কতটা ছড়িয়েছে তার ওপর।যদি প্রথমদিকেই এই রোগ ধরা পড়ে তবে সহজেই এটিকে সারানো সম্ভব।এই রোগটি সাধারণত অতিরিক্ত ফর্সা পুরুষের এবং পঞ্চাশ বছর বয়সের ওপরের পুরুষদের হয়। 

Madre Healthcare এই রোগটিকে প্রথম ধাপেই কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে রোগীকে।

লিপ ক্যান্সার বা ঠোঁটের এই ক্যান্সারের কারনগুলি কী? 

এই রোগ হবে কি হবে না বা আপনার জীবনে এই রোগের ঝুঁকি কতটা তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে একজনের জীবনযাপন নির্ভাহের পদ্ধতির ওপর।সাধারণত এই রোগটি যেই কারণে দেখা যায় সেইগুলি হলঃ 

১) প্রচুর পরিমানে ধূমপান করলে বা প্রচুর পরিমানে তামাকজাত দ্রব্য সেবন করলে।

২) প্রচুর পরিমানে মদ্যপানও এই রোগের কারণ হতে পারে। 

৩) সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মীর সংস্পর্ষে  বহুক্ষন থাকলে। 

৪) গায়ের রঙ খুব হালকা হলে।

৫) পঞ্চাশ বছরের ওপরে বয়স হলে। 

 

ঠোঁটের ক্যানসারের লক্ষণগুলি কী?

ঠোঁটের ক্যানসার হওয়ার আগে যে লক্ষণ কিছু দেখা যাবেই এমন কোনো ব্যাপার নেই।যদি আপনার ঠোঁটে কোনো ঘা বা ফোলা অংশ দেখতেও পান তার মানেই এই নয় যে আপনার লিপ ক্যান্সার হয়ে গেছে।আপনার সেটি সাধারণ ক্ষতও হতে পারে।তবে সাধারণত এই রোগে যেই লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে সেইগুলি হলঃ 

১) আপনার ঠোঁটে যদি কোনো ক্ষত হয় বা অতিরিক্ত মাংসপিন্ড গজায় এবং সেটি যদি অনেকদিনেও না সারে তাহলে সেটি ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা আছে। 

২) যদি ঠোঁটে অস্বাভাবিক কোনো লাল কিংবা সাদা ছোপ লক্ষ্য করা যায়। 

৩) ঠোঁট থেকে রক্ত পড়লে এবং অস্বাভাবিক ব্যথা হলে।

৪) চোয়ালে প্রচন্ড ব্যথা হলে। 

 

লিপ ক্যান্সার হলে শরীরে তার কী কী প্রভাব পড়তে পারে? 

 

১) ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

২) মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে যেতে পারে। 

৩) কথা বলায় বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

৪) খাবার খেতে এবং গিলতে অসুবিধা দেখা দিতে পারে। 

৫) মনখারাপ এবং উদ্বেগের উদ্রেক হতে পারে। 

 

এই রোগের চিকিৎসা কী? 

নিম্নলিখিত এই চিকিৎসা পদ্ধতি গুলির সাহায্যে এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব।সেইগুলি হলঃ 

১) কেমোথেরাপিঃ কেমোথেরাপি হল এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যা শরীরের ক্যানসারের কোষগুলিকে নষ্ট করে দিতে সাহায্য করে।এই পদ্ধতি সাধারণত ক্যানসারের কোষ গুলিকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে বাধা প্রদান করে। এই জন্য এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার জন্য একাধিক বার রোগীকে কেমো নিতে হতে পারে। কখন কোনো রোগীর একবার কেমো নেওয়ার পরে সেরে যেতে পারে আবার কারোর কারোর একাধিকবার কেমো নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে রোগটি কোন অবস্থায় আছে তার ওপর। 

২) ইমিউনোথেরাপিঃ এটি এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে ক্যানসারকে প্রতিরোধ করার জন্য। 

৩) টার্গেটেড থেরাপিঃ এই থেরাপিতে সাধারণত ক্যানসারের কোষগুলিকে বিনাশ করার জন্য শুধুমাত্র সেই কোষগুলিকে লক্ষ্য করেই থেরাপি দেওয়া হয়ে থাকে।এই থেরাপি ক্যানসারজনিত কোষ গুলিকে ছড়াতে বাধা প্রদান করে এবং শরীরের সুস্থ কোষগুলিকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। 

৪) রেডিয়েশন থেরাপিঃ এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে শরীরের ভেতর বিশাল শক্তিশালী এক্স-রে প্রবেশ করানো হয় যা ক্যান্সারের কোষ গুলিকে সমূলে বিনাশ করতে সাহায্য করে। 

সাধারণত বেশিরভাগ লিপ ক্যান্সার ধরা পড়ে দাঁতের চেক-আপ করানোর সময়। তাই ঘন ঘনই দাঁতের চেক-আপ করানো ভীষণভাবে জরুরী।ভালো ডেন্টিস্টকে দিয়ে নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করালে এই রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।  

 

 

Leave a comment