সিস্ট কি?
সিস্ট হতে পারে নানা আকারের। এগুলোর ভিতরে রক্ত এবং পানির মত তরল পদার্থ থাকে। সিস্ট অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। তবে এটি চার সেন্টমিটারের বেশি বড় হলে অপারেশন করানোই ভালো।সিস্টের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই।
তবে ধারনা করা হয় বিশেষ কিছু কারণে সিস্ট হয়ে থাকে।
১) অধিক ওজনের মহিলাদের সিস্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
২) বন্ধ্যত্ব রোগের চিকিৎসায় যে সমস্ত ঔষধ ব্যবহার করা হয় তার জন্যও দেখা দিতে পারে সিস্ট।
৩) সিস্ট হরমোন জনিত কারণেও হতে পারে।
৪) বংশে কারো থাকলে আপনারও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ওভারিয়ান সিস্ট কী?
ডিম্বাশয় মহিলা প্রজনন পদ্ধতির অংশ। ওভারিয়ান সিস্ট হল ওভারি বা ডিম্বাশয়ের ওপর অবস্থিত একটি জলপূর্ণ থলি। এটি গর্ভের উভয় পাশের নিচের পেটে অবস্থিত। মহিলাদের দুটি ডিম্বাশয় রয়েছে। কখনও কখনও, একটি ফুসকুড়ি ভরাট কোষ ওভারি উপর বৃদ্ধি পায়। এটি হল ওভারি সিস্ট। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওভারি সিস্ট বেদনাদায়ক এবং কোন উপসর্গ দেখা যায় না।
কতধরনের ওভারিয়ান সিস্ট হয়?
ফাংশনাল সিস্টঃ সাধারণত বেশির ভাগ নারীর ক্ষেত্রে ফাংশনাল সিস্ট হয়ে থাকে।ওভারি থেকে ডিম না ফুটলে অথবা ডিম ফোটার পরও ফলিকলগুলো চুপসে না গেলে সিস্ট সৃষ্টি হতে পারে।
পলিসিস্টিক (পিসিওএস) সিস্টঃ ওভারিতে যে ছোট ফলিকল থাকে সেগুলো পূর্ণাঙ্গ না হলে পলিসিস্টিক সিস্ট হয়।
এন্ডমেট্রিওটিক সিস্টঃ ওভারিতে যে টিস্যুগুলো থাকে সেই টিস্যুগুলো যদি জরায়ু ছাড়া পেটের অন্য কোথাও হয়ে থাকে তখন তাকে এন্ডমেট্রিওটিক সিস্ট বলা হয়। এগুলো ডিম্বাশয়ে এমনিতেই থাকতে পারে এবং বেশি পরিমাণ থাকতে পারে।
ডারময়েড সিস্টঃ এই সিস্ট চামড়া, চুল, দাঁতএও হতে পারে। এটিও সচরাচর থাকে। এর ফলে ক্যানসার হতে পারে।
সিস্ট এডোনোমাঃ ডিম্বাশয়ে এক ধরনের তরল জাতীয় পদার্থই জমাট বেঁধে এই ধরনের সিস্ট হয়।
আইভিএফ সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যা এবং স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সমস্যার জন্য গৌতম খাস্তগীরের Birth Clinic-এ যান।
ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণগুলি কী কী?
শারীরিক কিছু লক্ষন দেখে বোঝা যেতে পারে ওভারিয়ান সিস্ট হয়েছে কিনা।লক্ষনগুলি হলঃ
১) পেটে ব্যথা, পেটে বা শ্রোণীচক্রে হাল্কা ব্যথা, বিশেষ করে যৌনসম্পর্কের সময়।
২) জরায়ু থেকে রক্তপাত, ঋতু শুরুর প্রথমে বা চলার সময়ে বা শেষে ব্যথা; অনিয়মিত ঋতু, অথবা অস্বাভাবিক রক্তপাত বা রক্তের ছিটা লাগা।
৩) পেট ভরে থাকা, ভারি লাগা, চাপ লাগা, পেট ফোলা, বা পেট ফাঁপা।
৪) যখন ডিম্বাশয় তে একটি সিস্ট ফেটে যায়, তলপেটের একপাশে হঠাৎ ও তীব্র ব্যথা হতে পারে।
৫) মূত্রত্যাগ এর ঘটনের সংখ্যা এবং সহজতায় পরিবর্তন (যেমন মূত্রস্থলী) সম্পূর্ণরূপে খালি করায় অক্ষমতা, অথবা সংলগ্ন শ্রোণীচক্র এ চাপের কারণে বাওয়েল মুভমেন্ট এ অসুবিধা।
৬) ধাতগত উপসর্গ সমূহ যেমন অবসাদ, মাথাব্যাথা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে।
৭) বমি ভাব লাগতে পারে বা বমি হতে পারে।
৮) ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
ওভারিয়ান সিস্টের চিকিৎসা কী?
ওভারি সিস্ট বিভিন্ন আকারের উপর নির্ভর করে যেমন – সাইজ, সিস্টের ধরণ, মহিলার বয়স, সাধারণ স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতে গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা ইত্যাদি। ওভারিয়ান সিস্ট এর ঘরোয়া চিকিৎসা না করাই ভাল।
যতক্ষণ না সিস্ট খুব বড় হয় অথবা বৃদ্ধি না ঘটে, ততক্ষণ ডাক্তার সাধারণত পরামর্শ দেয় অপেক্ষা করার জন্য। কারণ তারা দেখে এটি চিকিৎসা ছাড়া সেরে যায় কিনা। অনেক সময় দেখা যায় অনেক সিস্ট চিকিৎসা ছাড়াই দ্রবীভূত হয়ে যায়। তবে সিস্ট যদি বৃদ্ধি হতে শুরু করে অথবা বড় হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসা করাতে হবে।